ঢাকা,রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়া-পেকুয়া আসনে আ.লীগের প্রার্থী আলোচনায় অবসরপ্রাপ্ত জজ আমিনুল হক!

এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার ১ (চকরিয়া পেকুয়া ) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন সাবেক সিনিয়র জেলা জজ আমিনুল হক। চকরিয়া উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের বাসিন্দা বাংলাদেশ জুড়িসিয়াল সার্ভিসের অবসরপ্রাপ্ত এ আইন কর্মকর্তা গতকাল বুধবার (৩১ অক্টোবর) বিকালে চকরিয়া শহরে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। সেখানে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন এবং আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে নিশ্চিত করেছেন।

সাবেক সিনিয়র জেলা জজ আমিনুল হক কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার অবিভক্ত বিএমচর (ভেওলা মানিকচর) ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম নুরুল হোসাইন চেয়ারম্যানের ছেলে। তিনি চকরিয়া পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হাকিম দুলাল এর ভগ্নিপতি।

মতবিনিমিয় সভায় আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ আমিনুল হক সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া, আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে তাঁর পরিকল্পনা ও জনগনের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করার একাগ্রতায় বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।

আমিনুল হক বলেন, আমি বাংলাদেশ জুড়িসিয়াল সার্ভিসের সিনিয়র জেলা জজ থেকে অবসর গ্রহণ করেছি ২০১৯ সালে। এরপর এলাকায় ফিরে গেল ৫ বছর ধরে বিভিন্ন জনসেবামূলক কাজে সম্পৃক্ত রয়েছি। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি প্রার্থী হতে চাই, জনগণের সেবক হতে চাই, সেই অভিপ্রায়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী।

তিনি বলেন, আমি ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি। চাকুরী জীবন শেষে এখন নৌকায় উঠেছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন পরিচ্ছন্ন মানুষ হিসেবে নিশ্চয় আমাকে নৌকা থেকে ফেলে দেবেনা ইনশাআল্লাহ। তবে, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেলেও যিনি চকরিয়া পেকুয়া আসনে নৌকার মাঝি হবেন তারপক্ষে কাজ করে যাবেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

সাবেক জজ আমিনুল হক আরও বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চকরিয়া পেকুয়া (কক্সবাজার ১) আসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে যাকে মনোনয়ন দেবেন আমি তার পক্ষে কাজ করবো। পাশাপাশি জনসেবা ও এলাকার উন্নয়নমূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে আওয়ামীলীগের সঙ্গে কাজ করে যাবো।

তিনি বলেন, আমি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে যখন ৬ষ্ট শ্রেণীতে যাই, সেই কিশোর অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি। এরপর ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে ছাত্রলীগের রাজনীতি ও বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ছিলাম। ২১ বছর বিচার বিভাগে কর্মরত থাকা অবস্থায় সততা ও নিষ্টার সাথে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। চাকুরির বিধিবিধান মেনে সেখানের যথাযথস্থানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বলিষ্ট কণ্ঠে অবস্থান নিয়েছি।

সাবেক বিচারক আমিনুল হক বাংলাদেশ জুড়িসিয়াল সার্ভিস এর সিনিয়র জেলা জজ থেকে গত ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে অবসর গ্রহণের পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে মনোযোগ দেন বলে জানান তিনি।

সাবেক অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জজ আমিনুল হক ১৯৬০ সালের ৪ এপ্রিল চকরিয়া উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের বেতুয়ারকুল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৫ সালে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম ডিগ্রী সম্পন্ন করেন। এরপর বিসিএস (বিচার) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৮৮ সালের ৯ এপ্রিল সহকারী জজ হিসেবে বাংলাদেশ জুড়িসিয়াল সার্ভিসে যোগদান করেন। চাকুরী জীবনে ধাপে ধাপে সফলতা দেখিয়ে পদোন্নতি লাভ করে ৩১ বছর সুনামের সহিত চাকুরী করেন। ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল পরিবেশ ও আপিল আদালতের সিনিয়র জেলা জজ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। এরআগে তিনি ফেনির জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে কর্মজীবন পার করেন। অবসরের পর তার মধ্যে জনসেবার একটি মনোবাসনা জাগ্রত হয়। একজন যোগ্য পিতার উত্তরসরী হিসেবে তিনি জনগণের মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিতে চান।
চাকুরী থেকে অবসরে যাওযার পর জজ আমিনুল হক নিজ এলাকায় এসে জনগণের কাছে তার জনসেবার আগ্রহ প্রকাশ করলে তিনি যথেষ্ট সাড়া পান। তখন তার মধ্যে নতুন করে অনুপ্রেরণা সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। আমার পরিবারে দুই জন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আমাকে অনুপ্রানিত করে। প্রধানমন্ত্রী শুধু বাংলাদেশের নেত্রী নন। তিনি বিশে^র জন্য একজন রোল মডেল। তাই জননেত্রীর স্বপ্ন পুরণে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হয়ে জনগনের সেবক হতে চাই।
তিনি বলেন, দলের মনোনয়ন পাওয়া না পাওয়া সেটা একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতে। তবে আমি একজন কর্মী হয়ে কাজ করে যেতে চাই।

 

পাঠকের মতামত: